সঞ্জয় কুমার কর্মকার যশোর।। স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি বলেছেন,বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার পিসি রায় ছিলেন বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞানী। তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে যুক্ত হয়ে শিল্প উৎপাদন করে জগতে খ্যাতি কুড়িয়েছেন। জ্ঞানই হলো উৎপাদনের প্রধান শক্তি। এ শক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানী পিসি রায় বিজ্ঞানের সকল শাখায় নিজেকে যুক্ত করে একাধারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে বাঙালি জাতিকে বিশ্বের মাঝে তুলে ধরেছেন। তার মতোই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
বুধবার (২রা আগষ্ট) সকালে উপজেলার রাড়ুলীতে বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র (পিসি) রায়ের ১৬২তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন,বিজ্ঞানী পিসি রায় অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি একাধারে শিল্পপতি,রসায়নবিদ,শিক্ষাবিদ,সমাজ সংস্কারক, রাজনীতিবিদ ও সমবায় আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শেখ হাসিনার সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধুসহ দেশের সকল গুণী ব্যক্তিদের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। অন্যান্য গুণী ব্যক্তিদের ন্যায় বিজ্ঞানী পিসি রায়েরও স্মৃতি বিজড়িত স্থান সংরক্ষণ করা হবে।
খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, কয়রা-পাইকগাছার মাটি অনেক উর্বর ও সমৃদ্ধ। এই মাটিতেই জন্মগ্রহণ করেছেন অসংখ্য গুণী ব্যক্তি। যাদের মধ্যে বিজ্ঞানী পিসি রায় ছিলেন অন্যতম।
বিজ্ঞানী পিসি রায় অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ ছিলেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, চিরকুমার এ বিজ্ঞানী জীবনের অর্জিত সকল সম্পত্তি মানব কল্যাণে দান করে গেছেন। এজন্য তিনি দেড়শ’বছর পরও অমর হয়ে রয়েছেন। গুণী এ বিজ্ঞানী শুধু পাইকগাছা নয়,গোটা দেশের গর্ব। তার জীবন ও আদর্শ ভবিষ্যত প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। বিজ্ঞানীর জীবনাদর্শ সম্পর্কে বেশি বেশি জানতে হবে। এজন্য তিনি তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদেরকে বিজ্ঞানীর জীবন সম্পর্কিত বই বেশি বেশি পড়ার জন্য আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু,সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম,পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, আচার্য পিসি রায় স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু,ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল কালাম আজাদ এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন। স্বাগত বক্তৃতা করেন পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম।
সহকারী অধ্যাপক ময়নুল ইসলামের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রেমকুমার মন্ডল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিয়াবুদ্দিন ফিরোজ বুলু,পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম,উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সমীরন কুমার সাধু,ইউপি চেয়ারম্যান কওসার আলী জোয়াদ্দার,আব্দুস সালাম কেরু এবং রাড়ুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক শংকর দেবনাথ।
অন্যান্য আলোচকরা পিসি রায়ের নামে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন,তাঁর বসতবাড়িকে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা,বিজ্ঞানীর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ,পাঠ্যপুস্তকে বিজ্ঞানীর জীবনী সম্পর্কিত অধ্যায় অন্তর্ভূক্ত,জাদুঘর ও সংগ্রহশালা স্থাপনসহ বিভিন্ন দাবি করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথিরা বিজ্ঞানীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করার মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান।
এসময় পিসি রায়ের উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এদিন বিকেলে প্রতিমন্ত্রী পাইকগাছা উপজেলার কাশিমনগরে অংশীদারিত্বমূলক পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প-৩ (পিআরডিপি-৩) কর্তৃক স্থাপিত পানি শোধনাগার উদ্বোধন করেন ও ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করেন।
আমাদেরবাংলাদেশ ডটকম/রাজু